ব্যস্ত জীবনের জন্য সময় বের করা অনেকের জন্য খুবই কঠিন মনে হয়। আসলেই ব্যাপারটা তাই। যদি আপনি সঠিকভাবে টাইম মেইন করতে না পারেন এবং পরিকল্পনা গ্রহণ করতে না পারেন, তাহলে এটাই হওয়ার কথা।
এখানে আমরা আলোচনা করব শরীরচর্চা করার সময় বের করার পাঁচটি কৌশল সম্পর্কে। এই কাজটি কৌশল সম্পর্কে আপনি যদি অবগত হয়ে যান, তাহলে ব্যস্ত সময়ে বিভিন্ন কাজকর্ম করার পরেও আপনি শরীর চর্চার জন্য সময় বের করতে পারবেন।
শরীরচর্চার প্রয়োজনীয়তা
শরীরের সার্বিক গঠন এবং কাজের প্রগ্রেস বৃদ্ধি করার জন্য শরীরে চর্চার প্রয়োজনীয়তা বলে শেষ করা যাবে না। বাস্তবিক জীবনে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য শরীরচর্চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এই আর্টিকেল যেহেতু শরীর চর্চার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে নয়, সেজন্য এই বিষয়ে আমরা বিশদ আলোচনা করতে পারলাম না। তবে এক কথায় শরীরচর্চার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। সুস্থ এবং সঠিক দেহ গঠনের জন্য শরীরচর্চা করা প্রয়োজন।
শরীর চর্চার জন্য সময় বের করার সেরা কৌশল
আপনি যদি শরীরচর্চা করতে চান এবং শরীরচর্চা করতে প্রয়োজনীয় সময় বের করতে অক্ষম হন, তাহলে শরীরচর্চা করার জন্য প্রয়োজনীয় সময় বের করার কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারেন।
প্রাথমিক পরিকল্পনা গ্রহণ
বর্তমান সময়ে আপনি কোন রুটিনে চলছেন সেটা অবশ্যই আপনি ভালো জানবেন। সেজন্য, আপনার প্রতিদিনের রুটিন পর্যালোচনা করে শরীর চর্চার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করতে পারেন।
বিষয়টা এরকম যে, যদি আপনার প্রতিদিনের রুটিনে সকালে সময় বের করতে পারেন, তাহলে এই সময়টিকে শরীর ফিট করার জন্য নির্ধারিত করতে পারেন। এছাড়া অন্য যে কোন সময় যদি আপনার অবশ্য সময় থাকে তাহলে সেই অবসর সময়কে আপনি শরীরকে ফিট করার কাজে ব্যবহার করতে পারেন।
তবে আপনার ব্যস্ততার পরিমাণ যদি খুবই বেশি থাকে, তাহলেও আপনি চাইলে আপনার কম ব্যস্ততার সময়ে আপনি একটি ছোট সময় বের করতে পারেন। সেজন্য, সকাল, দুপুর বা সন্ধ্যার এমন সময় বেছে নিন, যখন আপনি কম ব্যস্ত থাকেন।
স্বল্প সময় নির্ধারণ করুন
যখন আপনার ব্যায়াম করার অভিজ্ঞতা একেবারেই কম, তখন আপনি যদি প্রথম দিন ৩০ মিনিটের একটি ওয়ার্কআউট বেচে নেন, তাহলে সেটি মেনে চলা প্রতিদিনের জন্য কষ্টসাধ্য।
সেজন্য আপনাকে ওয়ার্ক আউট করার জন্য একটি সহজ এবং স্বল্প সময় নির্ধারণ করতে হবে। যদি সময় কম থাকে, ১৫-২০ মিনিটের, হাই ইন্টেন্সিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং (HIIT) করতে পারেন।

এছাড়া আপনার সময় যদি আরো কম থাকে তাহলে আপনি চাইলে, ১০ মিনিটের যোগব্যায়াম বা স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ করতে পারেন। এই ব্যায়াম করার মাধ্যমে আপনার শরীরের স্বাভাবিক ভারসাম্য বজায় থাকবে, এবং শরীর চর্চার উপকারিতা পাবেন।
যখন আপনার অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে তখন আপনি চাইলে ৫ মিনিট করে বৃদ্ধি করতে পারেন। তবে সর্বপ্রথম ১৫ থেকে ২০ দিন এই সল্প সময়ে ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন।
দৈনন্দিন কাজের মধ্যে শরীর চর্চার অন্তর্ভুক্তি
আপনি প্রতিদিন যে দৈনন্দিন কাজকর্ম সম্পাদন করেন সেই দৈনন্দিন কাজকর্মকে আপনি চাইলে আপনার শরীর চর্চার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। বিষয়টাতে অবাক হচ্ছেন তাই না?
আসলে অবাক হওয়ারই কথা। তবে আপনি চাইলে দৈনন্দিন কাজের মধ্যে শরীরচর্চা অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। এই কাজটি করার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গুলো নিতে পারেন:
- লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন।
- অফিসে কাজের ফাঁকে ৫ মিনিট হাঁটুন।
- বাড়িতে ছোটখাটো কাজের সময় স্ট্রেচিং করুন।
উপর উল্লেখিত তিনটি বিষয়ে আসলেই কোন কঠিন কাজ নয়। এগুলো আপনি চাইলেই করতে পারবেন। সেজন্য, দৈনন্দিন কাজের মধ্যে এই সমস্ত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।
প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার
প্রতিদিনের কঠিন সময়ের মধ্যে শরীরচর্চার জন্য সময় বের করার জন্য আপনি চাইলে প্রযুক্তির উপযুক্ত ব্যবহার করতে পারেন। শরীরচর্চার জন্য সময় বের করার ক্ষেত্রে প্রযুক্তির যে সমস্ত ব্যবহার আপনি করতে পারেন সেগুলো হল:
- আপনার স্মার্টফোনে ফিটনেস অ্যাপ ইনস্টল করুন যা আপনার ব্যায়ামের সময় মনে করিয়ে দেবে।
- বাড়িতে অনলাইনে শরীরচর্চার ভিডিও দেখে সময় বাঁচিয়ে শরীরচর্চা করতে পারেন, ইত্যাদি।
স্মার্টফোনে ফিটনেস অ্যাপ ইনস্টল করার মত কিছু সফটওয়্যার এর লিংক নিচে তুলে ধরা হলো! আপনি চাইলে এই সমস্ত সফটওয়্যার ডাউনলোড করতে পারেন এবং এগুলো আপনার ব্যায়ামের কাজে ব্যবহার করতে পারেন।
এগুলো খুবই কার্যকরী। শরীর চর্চার জন্য সময় বের করার ক্ষেত্রে।
অভ্যাস তৈরি করা
যে কোন কাজ করার ক্ষেত্রে অভ্যাস তৈরি করতে খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়। শুরুতেই আপনি কোন একটি কাজে অভ্যাস গঠন করতে পারবেন না। যখন আপনি একটি কাজ ছোট ছোট পরিমাণে করবেন তখন এই ছোট ছোট কাজগুলো একসময় অভ্যাসে পরিণত হবে।
ঠিক একই রকম ভাবে আপনি যদি শরীরচর্কে অভ্যাসে পরিণত করতে চান তাহলে আপনাকে প্রতিদিন কম সময় করে হলেও শরীর-স্বা করতে হবে। এরকমটা হলে কোন এক সময় দেখা যাবে শরীরচর্চা করা ছাড়া আপনার ভালো লাগবে না।
অভ্যাসে পরিণত করার জন্য নিচের বিষয়গুলো অনুসরণ করতে পারেন:
- সর্বপ্রথম ছোট থেকে শুরু করা প্রয়োজন। এবং এটিকে আরো বেশি কার্যকরী করার জন্য একটি রুটিন তৈরি করতে পারেন।
- শরীরচর্চাকে প্রতিদিনের অপরিহার্য কাজের অংশ হিসেবে দেখুন।
- দিনের একই সময়ে শরীরচর্চা করলে এটি অভ্যাসে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়াও যখন আপনি সবেমাত্র শুরু করবেন তখন এরকম কিছু ওয়ার্কআউট বেছে নিতে পারেন যে সমস্ত ওয়ার্কআউট খুবই সহজ এবং এগুলো করলে আপনি আনন্দ পান। শুরুতেই আপনি যদি কঠিন কোন ওয়ার্কআউট বেচে নেন তাহলে সেটি আপনার প্রগ্রেসের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে৷
শুরুতে সহজ ও মজার ওয়ার্কআউট বেছে নিন, যেন এটি যেন আপনার জন্য উপভোগ্য হয়। কারণ, নিয়মিত শরীরচর্চার জন্য মানসিক দৃঢ়তা খুব গুরুত্বপূর্ণ।