বর্তমান সময়ে অন্যতম আধুনিক উদ্ভাবন হলো ড্রোন টেকনোলজি। যা সামরিক, বাণিজ্যিক এবং ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার হয়ে আসছে। এর বহুমুখী ব্যবহার এবং ভবিষ্যতের উন্নতির কারণে এটি প্রযুক্তির এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা ড্রোন টেকনোলজি সম্পর্কে ভূমিকাতে এর ব্যবহার এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা সম্পর্কেও এখানে তুলে ধরা হবে।
বর্তমান সময়ে ড্রোন টেকনোলজি এর ব্যবহার
পুর্বের সময়ের অনেক কষ্টকর এবং মানুষের জন্য অনেক বেশি দুঃসাধ্য কাজগুলো ড্রোন টেকনোলজির মাধ্যমে করে ফেলা সম্ভব হচ্ছে। এবং একই সাথে জীবনের প্রায় প্রতিটি অংশে কিভাবে এটিকে ব্যবহার করা যেতে পারে সেটি উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
বর্তমান সময়ের জন্য নিজের ব্যবহার বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভাবে দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে থেকে, বেশ উল্লেখযোগ্যভাবে গ্রহণ টেকনোলজি ব্যবহার যে সমস্ত খাতের হয়ে আসছে সেটার মধ্যে থেকে উল্লেখযোগ্য হলো:
সামরিক খাতে
বর্তমান সমাজে কোন যুদ্ধের মোড় ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে গুড়িয়ে দেয়ার জন্য ড্রোন টেকনোলজি অন্যতম ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমান সময়ের সামরিক খাতে ড্রোন টেকনোলজি যে সমস্ত কাজে ব্যবহার করে আসছে, সেগুলো হল:
গোয়েন্দা নজরদারি
শত্রুপক্ষের গতি বিধি পর্যবেক্ষণের জন্য সাময়িক বাহিনীর পূরণ ব্যবহার করে থাকে। যেমন, পূর্বের সময় কোন দেশ যদি শত্রু পক্ষের নজরদারি করতে চান, তাহলে সে দেশকে ঝুকি নিয়ে সেখানে কিছু গোয়েন্দা লোকজন পাঠাতে হতো।
কিন্তু বর্তমান সময়ে ড্রোন ব্যবহার করার মাধ্যমে এই কাজটি খুব সহজেই সম্পন্ন করা যাচ্ছে। বিভিন্ন রকমের নজরদারি ড্রোন ব্যবহার করার মাধ্যমে কোন রকমের ঝুঁকি ছাড়াই সেই ড্রোনটির সেই স্থানে পাঠিয়ে দেয়া যাচ্ছে এবং যুদ্ধের সময় শত্রুর গতিবিধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এছাড়াও ড্রোনের মধ্যে বেশ কিছু অত্যাধুনিক টেকনোলজি ব্যবহার করার মাধ্যমে নজরদারি বিষয়টি আরো বেশি সহজতর হয়ে। এবং একই সাথে খুবই কার্যকরী হয়ে উঠেছে।
লক্ষ্যভেদী হামলা
যুদ্ধক্ষেত্রে নির্দিষ্ট টার্গেটে আক্রমন চালানোর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে শত্রুপক্ষের যেকোনো একটি স্থাপনা কে লক্ষ্য করে হামলা করার ক্ষেত্রে বর্তমান সময়ের ড্রোন খুবই উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এবং এটি খুবই কার্যকরী বটে।
বিস্ফোরক শনাক্তকরণ
এছাড়া বিভিন্ন জনপূর্ণ জায়গায় মাইন ও বিস্ফোরক শনাক্ত করতে সেনাবাহিনীরা ড্রোন ব্যবহার করে থাকে। পূর্বের সময়ে এই শনাক্তকরণ পদ্ধতি খুবই জটিল ছিল, এবং একই সাথে এটি খুবই ভয়ানক এবং ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।
তবে বর্তমান সময়ের ড্রোন ব্যবহার করার মাধ্যমে এই কাজটি সহজেই সম্পন্ন করা যাচ্ছে এবং একই সাথে ঝুকি এড়িয়ে এই কাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে।
কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন
কৃষি এবং খাদ্য উৎপাদনে ড্রোনের ব্যাপক ব্যবহার পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিভিন্ন কাজে গ্রহণ ব্যবহার করে কিসের উৎপাদন বৃদ্ধি করার, ক্ষেত্রে কৃষকরা অনেক বেশি এগিয়ে যাচ্ছেন।
নিচে থেকে জেনে নেয়া যাক সে ক্ষেত্রে কিভাবে ড্রোন ব্যবহার করা হয়ে থাকে, এবং এটি আসলে কি কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷
ফসল পর্যবেক্ষণ
বর্তমান সময় আপনি যদি কোন একটি জমির ফসল পর্যবেক্ষণ করতে চান তাহলে ফসল পর্যবেক্ষণ করার জন্য আপনাকে সশরীরে জমিতে গিয়ে উপস্থিত হতে হয় না।
ড্রোনের সাহায্যে কৃষকদের ফসলের অবস্থা বিশ্লেষণ করা এখন খুবই সহজ হয়ে উঠেছে।
কীটনাশক ছিটানো
জমিতে গিয়ে সরাসরি কীটনাশক ছিটানো অনেক ক্ষেত্রে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এবং এটি বিভিন্ন রকমের স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। কিন্তু বর্তমান সময়ের ড্রোন ব্যবহার করার মাধ্যমে কীটনাশক চেতানো খুবই সহজ হতো হয়ে উঠেছে।

স্বয়ংক্রিয় ড্রোন ব্যবহার করে, ক্ষেতে সার ও কীটনাশক ছিটানো যায়। পূর্বের তুলনায় খুবই কার্যকরী এবং একই সাথে সময় সাপেক্ষ।
বিপর্যয় মোকাবিলা ও উদ্ধার অভিযান
বর্তমান সময়ে যে সমস্ত অত্যাধুনিক গ্রহণ রয়েছে সে সমস্ত গ্রহণ ব্যবহার করার মাধ্যমে বিপর্যয় মোকাবেলা এবং উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা যায়।
উদাহরণস্বরূপ, উদ্ধার পরিকল্পনা বলতে এটা বোঝানো যেতে পারে যে বর্তমান সময়ে যদি কেউ জঙ্গলের মধ্যে হারিয়ে যায় তাহলে তাকে উদ্ধার করার ক্ষেত্রে ড্রোন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ড্রোন ব্যবহার করার মাধ্যমে তার কাছে সিগন্যাল পাঠানো যায় এবং একই সাথে তার গতি নির্ধারণ করা যায়।
এছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সহায়তার জন্য ড্রোন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ব্যাপারটা এরকম যে ভূমিকম্প, বন্যা বা আগুনের পর ক্ষতির হিসাব ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়াও জরুরী ঔষধ সরবরাহ করার কাজেও ড্রোন ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এছাড়া আরও যে সমস্ত কাজে ড্রোন ব্যবহার করা যায় সেগুলো হল:
শিল্প বাণিজ্যিক খাতে। এক্ষাতে সিনেমা বিবাহ এবং অন্যান্য ইভেন্টের জন্য উচ্চ মানের এরিয়াল শট নিতে ড্রোন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এবং একই সাথে পরিবহন ও ডেলিভারির কাজে ড্রোন ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এছাড়াও জননিরাপত্তার কাজে এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। পুলিশের নজরদারি, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং জনসমাগম পর্যবেক্ষণে ড্রোন
ড্রোন ব্যবহার করার চ্যালেঞ্জ এবং সীমাবদ্ধতা
যে কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা বিদ্যমান রয়েছে। কোন প্রযুক্তিই অসীম ক্ষমতার অধিকারী হতে পারেনা। এবং এরই ধারাবাহিকতায় ড্রোন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ এবং সীমাবদ্ধতা বিদ্যমান রয়েছে।
নিচে থেকে জেনে নেয়া যাক এটি ব্যবহার করার কিছু চ্যালেঞ্জ এবং সীমাবদ্ধতা:
- নিরাপত্তা ঝুঁকি: ড্রোন হ্যাকিং এবং সাইবার আক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে।
- আইনি বিধিনিষেধ: অনেক দেশে ড্রোন ব্যবহারের উপর কঠোর নিয়ম রয়েছে।
- ব্যাটারি ও প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা: অধিক সময় উড়ার জন্য শক্তিশালী ব্যাটারির প্রয়োজন। এবং হলে একটি অন্যতম সীমাবদ্ধতা।
শেষ কথা: বর্তমান সময়ে একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার হলো ড্রোন। বিভিন্ন রকমের সামরিক টন কিংবা অন্যান্য যে সমস্ত ড্রোন রয়েছে, সেগুলো ব্যবহার করার মাধ্যমে যেকোন অবস্থার মোড় ঘুরিয়ে করিয়ে দিতে পারে।
তবে বর্তমান সময়ে এই প্রযুক্তি শুধুমাত্র যে ভালো কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে সেটা কিন্তু নয়। অনেক সময় মানুষের নিরাপত্তা জনিত কারণে জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তবে আমাদের সকলেরই উচিত যে কোন প্রযুক্তিকে ভালো কাজে ব্যবহার করা এবং এগুলোর মাধ্যমে যাতে কারো ক্ষতি না হয় সেদিকে সচেষ্ট নজর রাখা।